মদীনা মনওয়ারাস্থ মসজিদে নববীর পেশ ইমাম ও খতীবের ফাত্ওয়া
মসজিদে নববীর খতীব আল্লামা ডঃ শায়খ আলী ইবনে আবদুর রহমান আল হোযায়ফী ১৯৯৭ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারী ঢাকার ধানমন্ডি ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত একটি বিরাট মাহফিলে প্রধান মেহমান হিসেবে যোগদান করেন। প্রেসিডেন্ট বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ এবং সউদী রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ্ উমর বারী, শায়খুল হাদীস মাওলানা আযীযুল হক ও বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মূফতী মুহাম্মদ নূরউদ্দীন উক্ত মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।
আল্লামা শায়খ আলী পবিত্র কুরআনের সঠিক তাফসীরের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, ‘মিথ্যা নুবুওয়াতের দাবীদার মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ও তার অনুসারীরা জঘন্য প্রতারক, বিপথগামী, ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী কাফির। কাদিয়ানীরা পবিত্র কুরআনের মনগড়া ও ভুল তাফসীর প্রচার করে মুসলমানদের বিভ্রান্ত করছে। ইসলামের বিশ্ববরেণ্য ও সর্বজনমান্য মূফতী ও আলিমদের দৃষ্টিতে কাদিয়ানীরা কাফির বলে চিহ্নিত হয়েছে’। তিনি আরো বলেন, ‘কাদিয়ানীদেরকে যারা কাফির মনে করে না বা তাদের সমর্থন করবে এবং মদদ দেবে তারাও কাফির’।
মসজিদে নববীর খতীব শিরক ও বে’দাতের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। তিনি পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ্র অনুসরণে খাটি ইসলামী জীবন যাপন করার জন্য মুসলমানদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। (দৈনিক ইনকিলাব)
আঞ্জুমানে দ্বীনে হানীফের পক্ষ থেকে ১৮/১১/৯২ইং তারিখে মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর নিকট পেশকৃত স্মারকলিপির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আহমদীয়া সম্প্রদায় তথা কাদিয়ানী সম্পর্কে দেশ বরেণ্য উলামা ও মাশায়েখ সমন্বয়ে গঠিত কমিটির অভিমত ও সুপারিশ
ইসলাম আল্লাহ্ তা’আলার একমাত্র দ্বীন। আল্লাহ্র কাছে ইসলাম ছাড়া আর কিছুই দ্বীন হিসেবে গ্রহণীয় নয়। আখেরী নবী ও হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে তা পরিপূর্ণ হয়। আল্লাহ্ তা’আলা কুরআন মজীদে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা দেনঃ
“আজ আমি পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন আর সম্পূর্ণ করে দিলাম তোমাদের উপর আমার নিয়ামত এবং তোমাদের জন্য দ্বীন হিসাবে ইসলামের উপর আমি সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম” (সূরা মায়িদাহঃ ৩)
পৃথিবীর বুকে আজ পর্যন্ত যতগুলো ধর্মমত প্রচলিত হয়ে এসেছে সকল ধর্মেরই কিছু কিছু মৌলিক আকীদা (বিশ্বাস) রয়েছে। কাউকে কোন ধর্মাবলম্বী বলে কেবল তখনই মেনে নেয়া হয়, যখন সে ঐ ধর্মের মৌলিক আকীদা সমূহের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। যদি সে ঐ ধর্মমতের কোন একটি মৌলিক আকীদাকে অস্বীকার করে, তবে তাকে সেই ধর্মাবলম্বী হিসেবে মেনে নেয়া হয় না।
ইসলামের ক্ষেত্রে একথাটি আরও কঠোরভাবে প্রযোজ্য। আল্লাহ্ তা’আলার তাওহীদ, একত্ববাদে বিশ্বাস, প্রিয় নবীজীসহ তাঁর পূর্ববর্তী সকল নবীর প্রতি ঈমান, পবিত্র কুরআনসহ সমূদয় আসমানী কিতাবের উপর বিশ্বাস, ফিরিশ্তাগণের অস্তিত্ব স্বীকার, পরকালীন জীবনের প্রতি ঈমান, হাশরের মাঠে বিচারের সস্মুখীন হওয়ার আকীদায় বিশ্বাস, বেহেশ্ত ও দোযখের অস্তিত্বে বিশ্বাস, তাক্দীরের প্রতি এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সর্বশেষ নবী হিসেবে অর্থাৎ তাঁর পর আর কোন প্রকারের (যথা শরীআতের অধিকারী নবী, শরীআতবিহীন নবী, উম্মতী নবী, সহায়ক নবী, যিল্লী বা ছায়া নবী- এক কথায় আর কোন প্রকার নতুন নবীর আগমন হবে না- এ সবের প্রতি ঈমান রাখা ইসলামের আবশ্যকীয় মৌলিক আকীদাসমূহের অন্যতম প্রধান আকীদা। যদি কেউ উক্ত আকীদাসমূহের কোন একটিকেও অস্বীকার করে, তবে সে যতই কালিমাহ্ পাঠ এবং নামায, রোযা, হাজ্জ, যাকাত প্রভৃতি আদায়কারী হোক না কেন, কিছুতেই সে মুসলিম বলে গণ্য হবে না, বরং সে অমুসলিম কাফির বলে বিবেচিত হবে।
কিয়ামত পর্যন্ত এই দ্বীন কায়েম থাকবে। নয়া কোন শরীয়াত ও দ্বীন আসার কোন সম্ভাবনা নেই। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন সর্বশেষ নবী ও রাসূল। তাঁর পর আর কোন নয়া নবী ও রাসূল আসবে না- এই আকীদা বা বিশ্বাস সম্পর্কে দ্ব্যর্থহীনভাবে সুস্পষ্ট ভাষায় কুরআন মজীদে ঘোষণা করা হয়েছে যে, “মুহাম্মদ (সাঃ) তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নন, বরং তিনি আল্লাহ্র রাসূল ও সর্বশেষ নবী” (সূরা আহযাবঃ ৪০)।
বুখারী, মুসলিম, আবূ দাউদ, তিরমিযী এবং অন্যান্য হাদীসগ্রন্হে সংকলিত হাদীসে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন যে, “আমিই সর্বশেষ নবী, আমার পর কোন নবী নেই।” কুরআন, হাদীস, ইজমা- এক কথায় শরীআতের সর্বপ্রকার দলীল দ্বারা এই বিশ্বাস অকাট্যভাবে প্রমাণিত। হযরত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নিয়ে সাহাবা-ই-কিরাম, আইম্মায়ে মুজতাহিদীন, মুহাদ্দিসীন, মুফাস্সিরীন, ফুকাহা, উলামা, মুজাদ্দিদীন ও সর্বযুগের মুসলিম উম্মাহ্র এই হলো সর্বসম্মত বিশ্বাস। ইমাম আযম আবূ হানীফা, হযরত আবদুল কাদির জিলানী, ইমাম গাযযালী, কাযী বায়যাবী, ইবনে কাসীর (রহঃ) প্রমুখ ইমাম, মুজতাহিদ, মুফাস্সির ও ফকীহ্ সুস্পষ্টভাবে অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, যদি কেউ খত্মে নুবুওয়াতে বিশ্বাস না করে, সে মুসলমান হিসেবে গণ্য হবে না। সে হবে কাফির। আলমগীরীসহ বিভিন্ন ফাত্ওয়া গ্রন্থেও উক্তরূপ ফাত্ওয়ার উল্লেখ রয়েছে। এমনিভাবে এও সর্ববাদীসম্মত ফাত্ওয়া যে, নুবুওয়াতের দাবীদার কোন ব্যক্তিকে যদি কেউ মুসলিম বলে বিশ্বাস করে তবে সে-ও ইসলামের অন্তর্ভূক্ত নয়।
এই কারণেই হযরত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা কিরামের যুগ থেকে নিয়ে সর্বযুগে যে কেউ নুবুওয়াতের দাবী করেছে তাকে অমুসলিম ও কাফির বলে ঘোষণা করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা হয়েছে।
আহমদীয়া সম্প্রদায় তথা কাদিয়ানীরা ইসলামের এই শাশ্বত, স্বত:সিদ্ধ মৌলিক বিশ্বাসের পরিপন্থী মতবাদ প্রচারের মাধ্যমে আমাদের দেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে অশান্তি ও বিশৃংখলা সৃষ্টির প্রয়াস চালিয়ে আসছে। উল্লেখ্য যে, অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে জন্মগ্রহণকারী মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (জন্ম ১৮৩৫, মৃত্যু ১৯০৮) নামক জনৈক ব্যক্তি বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের প্ররোচনায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় ১৮৮২ সাল থেকে নুবুওয়াতের দাবী করে। তার অনুসারীদের নিয়ে কাদিয়ানী তথা আহমদীয়া নামে একটা নতুন ধর্মীয় দল প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী হিসেবে স্বীকার করে এবং মুসলমানদের কাফির বলে মনে করে। মুসলমানদের সাথে বিবাহ ও সামাজিক সম্পর্ক রাখা, এমনকি মুসলমানদের মসজিদে নামায পড়া, তাদের নিজস্ব কবরস্থানে মুসলমানদের কবর দেয়া জায়িয বলে মনে করে না।
এই মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী স্পষ্ট ভাষায় নিজেকে নবী বলে দাবী করেছে। তার প্রণীত ‘হকীকাতুল ওহী’র ১৫০ পৃষ্ঠায় সে নিজে লিখেছে, “সত্য খোদা তিনিই যিনি কাদিয়ানে স্বীয় রাসূল পাঠিয়েছেন।” উক্ত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কর্তৃক নুবুওয়াত দাবীর আরো বহু উদ্ধৃতি রয়েছে।
মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর ইসলামবিরোধী এই দাবীর কারণে বিশ্বের বরেণ্য ও সর্বজনস্বীকৃত উলামা ও মূফতীগণ তাকে এবং তার অনুসারী আহমদী তথা কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম কাফির বলে সর্বসম্মত ঘোষণা দেন। তাদের মধ্যে উপমহাদেশের উল্লেখযোগ্য হলেন শায়খুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী, শায়খুল ইসলাম হোসাইন আহমদ মাদানী, আল্লামা আতাউল্লা শাহ্ বুখারী, মাওলানা ইউসুফ বিন্নোরী, মুফ্তী মুহাম্মদ শফী, মুফ্তী মাহমুদ প্রমুখ এবং বাংলাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলিম মাওলানা আবূ বকর সিদ্দীকি (পীর সাহেব,ফুরফুরা), মাওলানা রুহুল আমীন বশিরহাটি, মাওলানা নেছারুদ্দীন (পীর সাহেব,শর্ষিনা),আল্লামা তাজুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুফ্তী সাইয়িদ মুহাম্মদ আমীমুল এহসান মুজাদ্দেদী বরকতী, মুফ্তী দীন মুহাম্মদ খান, মাওলানা নূর মুহাম্মদ আজমী, মুফতী ফয়জুল্লাহ হাটহাজারী, মাওলানা শামসুল হক ফরীদপুরী, মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ (হাফিজ্জী হুজুর), মাওলানা আতহার আলী (রহঃ) প্রমুখ মণীষীবৃন্দ।
এপ্রিল ১৯৭৪ সালে রাবিতা আল-আলম আল-ইসলামীর উদ্যোগে সারা বিশ্বের ১৪৪টি ইসলামী সংগঠনের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, ফকীহ ও আলিমগণের সমন্বয়ে এক সভা মক্কা মুকাররমায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বসম্মতভাবে কাদিয়ানী তথা আহমদী সম্প্রদায়কে অমুসলিম বলে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
মুসলিম উম্মার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এবং বরেণ্য মুফ্তী ও উলামায়ে কিরামের সর্বসম্মত ফাত্ওয়ার প্রেক্ষিতে সউদী আরব, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়াসহ বহু মুসলিম দেশে আহমদী সম্প্রদায় তথা কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম বলে সরকারী ঘোষণা দিয়েছে।
বর্তমানে এই কাদিয়ানীরা ‘আহমদী মুসলিম জামাত’ নামে বাংলাদেশে তাদের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। মুসলমান পরিচয় এবং ইসলামী পরিভাষাসমূহ ব্যবহার করে ও কুরআন করীমের তথাকথিত তাফসীরের নামে সাধারণ মুসলমানদেরকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করে চলেছে। সাধারণ মাসুষ প্রকৃত অবস্থা না জানার কারণে তাদেরকে মুসলমান মনে করে অতি সহজেই প্রতারণার শিকার হচ্ছে।
সম্প্রতি কাদিয়ানীরা ‘কুরআন মজীদ’ নামে বাংলা ব্যাখ্যাসহ একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে। এতে তারা স্বকপোলকল্পিত, মনগড়া, ইসলামের আকীদার পরিপন্থী ব্যাখ্যা দিয়ে কুরআন মজীদের বিকৃতি সাধনের অপপ্রয়াস চালিয়েছে। যেমন সূরা-আহযাবের ৪১নং আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছে, “খাতামুন নাবিয়ীনের অর্থ যদি করা হয় শেষ নবী যাহার পর কখনো নবী আসিবেন না তাহা হইলে প্রসংগের সহিত কোন সংগতি থাকে না। এবং খাপ ছাড়া হইয়া পড়ে…….(পৃষ্ঠা ৮৭৬)।” হযরত ঈসা (আঃ) সম্পর্কে লেখা হয়েছে, “অনেক বৎসর পর অতি বৃদ্ধ বয়সে তিনি কাশ্মীরে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন (পৃষ্ঠা ১৩৫)”। সূরা আস সাফ্ফ-এর ৭নং আয়াতের ব্যাখ্যায় (পৃষ্ঠা ১১৬৭) বলা হয়েছে, “এই যুক্তি ধারার অনুসিদ্ধান্ত হিসেবে আহমদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতা প্রতিশ্রুত মসীহের (তথা কাদিয়ানী) উপরও এই ভবিষ্যত বাণী সমভাবে প্রযোজ্য। কেননা তাহাকেও আল্লাহ্ তা’আলা ওহীর মাধ্যমে ‘আহমদ’ নামে অভিহিত করিয়াছেন (বারাহীনে আহমদীয়া)”। এমনিভাবে আরো বহু বিকৃত ও অপব্যাখ্যার নমুনা এতে রয়েছে।
উপরোক্ত প্রামাণ্য তথ্যসমূহের প্রেক্ষিতে এই কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত যে, কাদিয়ানীরা অমুসলিম ও কাফির। ইসলামের পরিভাষাসমূহ যথাঃ ঈমান, নামায, রোযা, মসজিদ, আযান ইত্যাদি ব্যবহার করার তাদের কোন অধিকার নেই। তাদের উপাসনালয়কে ‘মসজিদ’ বলা যাবে না। তাদের প্রকাশিত তথাকথিত তাফসীর গ্রন্থটি ইসলামের মৌলিক আকীদার পরিপন্থী। এটিতে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর নুবুওয়াতের মিথ্যা দাবীকে প্রতিষ্ঠিত করার হীন উদ্দেশ্যে কুরআনের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। সুতরাং এটি কুরআনের তাফসীর নয়।
মুসলিম জনসাধারণের ঈমান-আকীদার হেফাযত কল্পে এবং দেশ ও জাতিকে অশান্তি, বিশৃঙ্খলা এবং এদের প্রতারণা থেকে রক্ষার নিমিত্তে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিকট কমিটির দ্ব্যর্থহীন সুপারিশ হলোঃ
১। অবিলম্বে আহমদীয়া জামাত তথা কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম বলে ঘোষণা দেয়া হোক।
২। ইসলামের বিশেষ পরিভাষাসমূহ যথাঃ নামায, রোযা, যাকাত, আযান, মসজিদ, সাহাবী প্রভৃতি শব্দের ব্যবহার তাদের জন্য নিষিদ্ধ করাসহ ‘মসজিদ’ নামে তাদের উপাসনালয় নির্মাণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক।
৩। “আহ্মদীয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশ” কর্তৃক প্রকাশিত কুরআন মজীদের বিকৃত ও অপব্যাখ্যা সম্বলিত তথাকথিত প্রন্থটিসহ মুসলিম পরিচয় সম্বলিত তাদের যাবতীয় প্রচারণামূলক বই-পুস্তক, লিফলেট, বুলেটিন বাজেয়াপ্ত ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক।
বিশেষজ্ঞ কমিটির সিদ্ধান্তে স্বাক্ষরদানকারী সদস্যবৃন্দের নাম ও ঠিকানাঃ
১। মাওলানা ওবায়দুল হক (কমিটির সভাপতি), খতীব, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদ, ঢাকা। (১০-৫-৯৩)
২। মুফ্তী মাওলানা আবদুস সাত্তার (সদস্য), মাননীয় সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদ।
৩। মাওলানা আতাউর রহমান খান (সদস্য), মাননীয় সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদ।
৪। মাওলানা মুহাম্মদ আমীনুল ইসলাম (সদস্য), খতীব, লালবাগ শাহী মসজিদ, ঢাকা।
৫। (শায়খুল হাদীস) মাওলানা আযীযূল হক (সদস্য), মুহতামিম, জামিয়া রাহমানিয়া, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
৬। মাওলানা ফজলুল হক আমিনী (সদস্য), মুহতামিম, জামিয়া কুরআনিয়া, লালবাগ, ঢাকা।
৭। মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুস সিকদার (সদস্য), অধ্যক্ষ, মাদ্রাসা-ই আলিয়া, ঢাকা।
৮। মাওলানা আহমদ শফী (সদস্য), মুহতামিম, জামিয়া মঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
৯। মাওলানা মুহাম্মদ হারুন ইসলামাবাদী (সদস্য), মুহতামিম জামিয়া ইসলামিয়া, পটিয়া, চট্টগ্রাম।
১০। মাওলানা মুহাম্মদ সালেহ (সদস্য), অধ্যক্ষ, আলিয়া মাদ্রাসা, খুলনা।
১১। আ. ন. ম. ইমামুদ্দীন (সদস্য),অধ্যক্ষ, মুস্তফাবিয়া আলিয়া মাদ্রাসা, বগুড়া।
১২। মাওলানা আবদুল করীম শায়খে কৌড়িয়া (সদস্য), চৌকিদিঘি, সিলেট।
১৩। মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল জাব্বার (সদস্য), পীর সাহেব, বায়তুশ শরফ্, চট্টগ্রাম।
১৪। মাওলানা কাযী মুহাসিম বিল্লাহ (সদস্য), মুহতামিম, দড়াটানা মাদ্রাসা, যশোর।
১৫। মাওলানা শাহ মুহিবুল্লাহ (সদস্য), অধ্যক্ষ, শর্ষিণা আলিয়া মাদ্রাসা, বরিশাল।
১৬। হাফেয মাওলানা আবদুল জলীল (সদস্য), অধ্যক্ষ, কাদেরিয়া তৈয়্যিবিয়া আলিয়া মাদ্রাসা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
১৭। ডঃ মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান (সদস্য), প্রফেসর, আরবী ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী।
১৮। মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ (সদস্য-সচিব), পরিচালক, গবেষণা বিভাগ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ঢাকা।